আবারো ফ্রিতে চলবে ফেসবুক এবং মেসেঞ্জার;
মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যালান্স না থাকলেও এখন থেকে গ্রাহক ফেসবুক ও মেসেঞ্জার অ্যাপ শুধু টেক্সটের মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া ফেসবুকের ডিসকভারি ব্রাউজারে ফ্রি ইন্টারনেট ব্রাউজিং সুবিধা চালু করা হয়েছে।
ডিসকভারি ব্রাউজারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা পাঠ্যভিত্তিক তথ্য যেমন-শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজ, এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি সংক্রান্ত নির্দেশনা, অন্যান্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যসহ ফ্রি ডেটা সীমার মধ্যে বিভিন্ন ই-পরিষেবায় সংযুক্ত থাকতে পারবেন।
অন্যদিকে, সকল অপারেটরের জন্য প্রকাশ করা হয়েছে মোবাইল ডেটা প্যাকেজ নির্দেশিকা, যা ১ মার্চ ২০২২ থেকে সব অপারেটদের মনে চলতে হবে। নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, যেকোনো অপারেটর এককালীন সর্বোচ্চ ৮৫টি প্যাকেজ চালু রাখতে পারবে।
৯ নভেম্বর (মঙ্গলবার) বিটিআরসির প্রধান সম্মেলন কক্ষে এসব সেবার উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান। অনুষ্ঠানের শুরুতে ডাটা প্যাকেজ নির্দেশিকা ও ফ্রি ফেসবুক-মেসেঞ্জার ব্যবহার বিষয়ে বিশদ উপস্থাপনা করেন বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রি. জে. মো. নাসিম পারভেজ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয় যে, দেশের সকল মোবাইল অপারেটরের তিন ধরনের প্যাকেজ থাকবে- নিয়মিত প্যাকেজ, গ্রাহককেন্দ্রিক বিশেষ প্যাকেজ এবং রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট প্যাকেজ। একটি অপারেটরের নিয়মিত এবং গ্রাহককেন্দ্রিক বিশেষ প্যাকেজ মিলিয়ে সর্বোচ্চ সংখ্যা হবে ৮৫টি। তবে নিয়মিত অথবা গ্রাহককেন্দ্রিক বিশেষ প্যাকেজ সংখ্যা এককভাবে ৫০টির অধিক হতে পারবে না। মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কাজের জন্য সর্বোচ্চ ১০টি প্যাকেজ ব্যবহার করতে পারবে। প্যাকেজের ভিন্নতা নির্ধারণে দুটি প্যাকেজের মধ্যে ন্যূনতম পার্থক্য হবে ১০০ এমবি ডেটা অথবা ১০ মিনিট টকটাইম অথবা উভয়ই। সকল প্যাকেজের মেয়াদ ৩/৭/১৫/৩০ দিন হিসেবে করতে হবে।
এছাড়া একজন গ্রাহকের ডেটা প্যাকেজের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর অব্যবহৃত ডেটা পরবর্তী প্যাকেজে যোগ হবে যোগ হবে, যদি গ্রাহক কোনো প্যাকেজের মেয়াদ শেষ হবার পূর্বেই একই ডেটা প্যাকেজ (ভিন্ন ভিন্ন মেয়াদ সহ) কিনে থাকেন।
মোবাইল কানেক্টিভিটি জনগণের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, জনগণের কানেক্টটিভিটি বাড়াতে সারাদেশের জন্য ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে এক দেশ এক রেট চালু করা হয়েছে এবং দুর্গম অঞ্চলে ফোরজি নেটওয়ার্ক চালু হয়েছে। মার্চের মধ্যে অপারেটরদেরকে গ্রাহকের কাছে সব ধরনের বার্তা বাংলায় প্রেরণ করতে হবে বলেও জানান তিনি।
ফেসবুক বর্তমানে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতামূলক আচরণ করছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় উসকানিমুলক ছবি, ভিডিও ও পোস্ট নিয়ন্ত্রণে ফেসবুকের সঙ্গে কাজ করছে বিটিআরসি।
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান বলেন, ফ্রি ফেসবুক মেসেঞ্জার চালুর ফলে ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন মানুষও নেটওয়ার্কে কানেক্টেড থাকার সুযোগ পাবে। প্রযুক্তির প্রসারের ফলে বর্তমানে সরকারি অফিসগুলো সহজে এবং দ্রুততম সময়ে মানুষকে সেবা দিতে পারছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী আজমান, রবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ রশীদ, বাংলালিংকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী তাইমুর রহমান, টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাহাব উদ্দিন, ফেসবুকের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের কানেক্টিভিটি অ্যান্ড অ্যাকসেস পলিসির প্রধান টম সি ভার্গেস।
বাংলাদেশে বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫.২ কোটি এবং সর্বোচ্চ ফেসবুক ব্যবহারকারীর দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান দশম। ইউনিক মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা আনুমানিক ১০ কোটি অর্থাৎ প্রতি দুই জন মোবাইল গ্রাহকের বিপরীতে একজন গ্রাহক ফেসবুক ব্যবহার করে। দেশে মোট মেসেঞ্জার ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩ কোটি ৭৫ লাখ ২৭ হাজার (২০২০ সালের তথ্য অনুযায়ী)।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন